মিঠাপুকুর হাসপাতাল থেকে প্রসূতিকে ডেকে নার্সের বাসায়,নবজাতকের মৃত্যু
আপডেট সময় :
২০২৫-০৯-১৪ ১৭:৪৮:৫৭
মিঠাপুকুর হাসপাতাল থেকে প্রসূতিকে ডেকে নার্সের বাসায়,নবজাতকের মৃত্যু
রুবেল হোসাইন সংগ্রাম,রংপুর :
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা এক প্রসূতি নারীকে নার্স তার নিজ বাসায় নরমাল ডেলিভারি করার সময় নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ওই নার্সের নাম,দুলালী বেগম। তিনি মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত আছেন।
নিজ বাড়িতে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ছাড়াও দুলালী বেগম, মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত থাকায়, তার নিজস্ব সক্রিয় দালাল চক্র রয়েছে। এই দালাল চক্র হাসপাতালে আসা রোগীদের প্রভাবিত করে হাসপাতাল থেকে ৫০০ গজ দুরে দুলালীর নিজ বাসায় নিয়ে যান। সেখানে অবৈধভাবে নারীদের গর্ভপাত ঘটানো এবং প্রসূতি নারীদের স্বাস্থ্য পরিক্ষার নামে অর্থনৈতিক লেনদেন সহ ঝুঁকিপূর্ণ ডেলিভারি করেন। এতে বিভিন্ন সময়ে গর্ভবতী নারী এবং নবজাতকরা মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা সহ মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানান, নবজাতকের মৃত্যুর ৭/৮ দিন পূর্বেও তারা উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের আলীপুর থেকে, পরিক্ষা নীরিক্ষার জন্য মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন। সেখানে সেদিন কর্তব্যরত নার্স দুলালী বেগম ছিলেন। পরে তিনি ওই নারীর স্বামী রাজু মুন্সিকে বলেন, এক সপ্তাহ পর মাতৃকালীন প্রসব বেদনা উঠলে তার বাসায় নিয়ে আসতে হবে। তিনি কোনো রকমের সিজার ছাড়ায় বাচ্চা ডেলিভারি করবেন।
এদিকে একসপ্তাহ পর, শনিবার সন্ধ্যায় প্রসূতির প্রসব বেদনা উঠলে স্বজনরা হাসপাতালে যান। সে সময় হাসপাতালে থাকা নার্স দুলালি বেগম, নরমাল ডেলিভারির কথা বলে কৌশলে প্রসূতীকে তার নিজ বাসায় নিয়ে গিয়ে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করেন। কিন্তু চিকিৎসা জনিত ঘাটতিতে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরে তড়িঘড়ি করে নার্স বিষয়টি ধামাচাপা দেন।
ভুক্তভোগীর স্বামী রিয়াজুল ইসলাম রাজু মুন্সি বলেন, আমি জানতাম দুলালী বেগম আগে থেকেই এসব কাজ করেন। কিন্তু আমার বাচ্চাটি মারা যাওয়ার বিষয়টি মানতে পারছি না। ওই সেবিকা বলেছিলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। আমি কম টাকায় আমার বাড়িতে আপনার স্ত্রীকে নরমাল ডেলিভারি করবো।
অভিযুক্ত নার্স দুলালী বেগম বলেন, আমি হাজার হাজার বাচ্চা ডেলিভারি করি। কোনোদিন কোনো সমস্যা হয়নি। হাসপাতালে যেসমস্ত রোগীরা ভরসা পায়না,তারাও এখানে আসে। আশেপাশের লোকজনকে বলে দেখেন, দিনে কত লোকজন আসে। কেউ কোনোদিন অভিযোগ করেনি। আর এবিষয়টা সমাধান হয়েছে। এখানে অভিযোগের কিছু নেই।
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (আরএমও) ডা. মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। দুলালী বেগম একজন সিনিয়র নার্স এবং আমাদের স্টাফ। তার দায়িত্ব ডায়াবেটিস রোগীদের সেবা দেওয়া, প্রসূতিদের সেবা প্রদান করা তার কাজ নয়। উনি বাসায় এসব কর্মকাণ্ডে লিপ্ত আছেন এ বিষয়েও শুনেছি। এটা ঝুঁকিপূর্ণ একটি কাজ। যদি অভিযোগ পাই, অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে
নিউজটি আপডেট করেছেন :
[email protected]
কমেন্ট বক্স